November 14, 2025
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায় বাংলাদেশি মৌলবাদী সংগঠনের যুক্ত থাকার আশঙ্কা। রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তর ও বিএসএফের রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কলকাতা ও মুর্শিদাবাদ, ১৩ এপ্রিল:
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তির পেছনে বাংলাদেশের মৌলবাদী সংগঠনের যোগ থাকার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তর ও বিএসএফের রিপোর্ট অনুযায়ী, জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (JMB) এবং আনসারুল্লা বাংলা টিম (ABT)-এর সদস্যরা সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছে।
জানা গিয়েছে, ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে অসন্তোষকে হাতিয়ার করে এই মৌলবাদীরা স্থানীয়দের উসকে দিয়ে অশান্তি তৈরি করে। ভারতীয় নাগরিকদের একাংশকেও প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছিল মুখোমুখি সাক্ষাতে কিংবা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে।
বিএসএফের রিপোর্টে উদ্বেগ:
জঙ্গিপুর সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জঙ্গি-দুষ্কৃতীদের আঁতুড়ঘর হিসেবেই পরিচিত। সেখান থেকেই এই প্ররোচনার সূত্রপাত হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। জঙ্গিপুর মহকুমায় নদীবেষ্টিত সীমান্ত হওয়ায় নিরাপত্তা দুর্বল, যার সুযোগ নিয়েছে জঙ্গিরা। রিপোর্টে এমনকি বাংলাদেশি নাগরিকদের অশান্তিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক চাপানউতোর:
ঘটনার পর রাজনৈতিক তর্জা চরমে উঠেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মৌলবাদীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। রাজ্য প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ।”
পালটা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি নিজেই বাংলাদেশ থেকে লোক ঢুকিয়ে পরিকল্পিতভাবে গোলমাল পাকিয়েছে। তারা ফেক ভিডিও ছড়িয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।”
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া:
যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “ওয়াকফ আইন নিয়ে হিংসা উসকে দেওয়া হচ্ছে। হিন্দুদের উপর হামলা, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে—এই অশান্তির পেছনে সংকীর্ণ রাজনীতি কাজ করছে।”
অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর পদক্ষেপ:
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। ১৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফেক ভিডিও ছড়িয়ে যারা উত্তেজনা বাড়াচ্ছিল তাদের আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিএসএফ এবং সিআরপিএফ-এর মোট ১৪ কোম্পানি বর্তমানে মুর্শিদাবাদে মোতায়েন রয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই চাইছেন বিএসএফ দীর্ঘমেয়াদে থেকে যাক।
পুলিশের সতর্কবার্তা:
জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার আনন্দ রায় জানান, “কেউ যেন গুজবে কান না দেয়। সন্দেহজনক কিছু দেখলে কন্ট্রোল রুমে জানান।”
Recommended Post
All Rights Reserved © 2025 Siliguri Reports
Leave a Comment