November 14, 2025
শিলিগুড়ির জ্যোতিনগর এলাকায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভাঙচুর, লুটপাট ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
শিলিগুড়ি, ১৪ এপ্রিল:
সোমবার ভোররাত থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শিলিগুড়ির পুরনিগমের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগর। স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।
প্রথমে বচসা, পরে ঢিল ছোঁড়াছুঁড়ি—দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র হাতাহাতি হয়। ঘটনায় বহুজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংঘর্ষের মাঝে একদল দুষ্কৃতী তিনটি বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। টোটোর কাচ ভাঙা হয় এবং দোকানের শাটার ভেঙে লুটপাট হয়।
ঘটনায় ওয়ার্ড কাউন্সিলার বিবেক সিং ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও তাঁকেও একপক্ষ ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের অভিযোগ, কাউন্সিলার নিজের দায়িত্ব পালন না করে ঢিল ছোঁড়ায় অংশ নেন। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর ঘটনাস্থলে গিয়ে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “কেউ যেন গুজবে কান না দেন।” তবে শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন। তাঁর মতে, “শনিবার রাত থেকেই উত্তেজনা ছিল। পুলিশ আরও তৎপর হলে এই ঘটনা এড়ানো যেত।”
সংঘর্ষের সূত্রপাত শনিবার রাতেই—জ্যোতিনগর নদীর ঘাটে মদের আসরে প্রতিবাদ জানালে দুই তরুণকে মারধর করা হয়। পরদিন সকালে চড়কপুজোর প্রস্তুতির সময় ফের উত্তেজনা ছড়ায়। এক পক্ষের অভিযোগ, মাঠে উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহার করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা হয়। অন্যপক্ষের দাবি, একজন তরুণকে মারধরের প্রতিবাদ করতেই সংঘর্ষ হয়।
একপর্যায়ে নদীর চর সংলগ্ন রাস্তায় ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। আক্রান্ত পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও তারা নিষ্ক্রিয় ছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশ কমিশনার ছাড়াও ডিসিপি তন্ময় সরকার, বিশ্বচাঁদ ঠাকুর ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনেন।
এদিকে, রাজ্যের অন্যান্য অংশের মতো শিলিগুড়ির ঘটনাও যাতে বড় আকার না নেয়, সেজন্য এসিপি (পূর্ব-১) রবিন থাপাকে এখনও পর্যন্ত রিলিজ করেনি শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশ।
সন্ধ্যায় যথারীতি চড়কপুজো হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছিল চোখেমুখে। এদিনের ঘটনায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ শিলিগুড়ির প্রতিটি থানায় ডেপুটেশন জমা দেয়।
Recommended Post
All Rights Reserved © 2025 Siliguri Reports
Leave a Comment