November 14, 2025
বলিউড সিনেমার মতো সূর্যমুখী বাগান এখন খড়িবাড়িতেই! অনুপ মণ্ডলের বাগানে রিলস থেকে ফুল বিক্রি, আয় মাসে ৪০ হাজারের বেশি।
খড়িবাড়ি, ১২ এপ্রিল: বলিউডের কালজয়ী সিনেমা 'সিলসিলা'-র "দেখা এক খোয়াব" গানের সেই বিখ্যাত সূর্যমুখী ফুলের খেত অনেকের মনেই আজও জেগে থাকে। এমন পরিবেশে যদি শুটিং করা যেত — এমন স্বপ্ন অনেকেই দেখেন। শিলিগুড়ির অদূরে বাতাসি বলাইঝোরা মৌজায় সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন অনুপ মণ্ডল।
স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ মণ্ডল চার বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন রঙিন এক ফুলবাগান। এর মধ্যে দু'বিঘা জমি জুড়ে শুধুই সূর্যমুখী। বাকি জমিতে গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা এবং বোতল ব্রাশ ফুল ফুটে রয়েছে। এই বাগানে প্রতিদিন ভিড় করছেন রিলসপ্রেমী, পর্যটক ও ফুলপ্রেমীরা। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও বানাচ্ছেন। অনুপ নিজেও খুশি, কারণ শুধু শুটিংয়ের সুবাদেই মাসে ৪০ হাজার টাকার বেশি আয় হচ্ছে তাঁর।
তবে এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে লড়াইয়ের গল্প। ২০১৮ সালে বাগডোগরা কালীপদ ঘোষ তরাই কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর অনুপ আইটিআই করলেও কোনও চাকরি মেলেনি। কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় চাষবাস ছিল হাতের কাজ। দাদা সৌরভকে সঙ্গে নিয়ে গোলাপ চাষ শুরু করেন। সেখান থেকেই শুরু ফুলের ব্যবসা।
বর্তমানে বিভিন্ন বিয়ে ও অনুষ্ঠানে সরবরাহ করা হয় সূর্যমুখী ফুল। অতিরিক্ত ফুল শুকিয়ে তৈরি হয় তেল। দিনে গড়ে দেড় হাজার টাকা রোজগার হচ্ছে। অনুপকে দেখে এলাকার আরও অনেকেই ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
তবে সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। উন্নতমানের বীজ ও চারা, টিস্যু কালচারের অভাব, সাশ্রয়ী সুদের ঋণের অপ্রাপ্যতা এবং ফুল সংরক্ষণের জন্য হিমঘরের ঘাটতি এখনো ভাবিয়ে তোলে অনুপকে।
এই বিষয়ে খড়িবাড়ি ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা ঠাকুরদাস কার্জি জানান, “ফুলচাষিদের চাহিদা অনুযায়ী সরকারিভাবে সাহায্য পাওয়া সম্ভব। সৌরবিদ্যুৎচালিত মিনি হিমঘর প্রকল্পে ভরতুকির ব্যবস্থাও রয়েছে। সূর্যমুখী বীজ বিক্রির জন্য নাফেড-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে সরকারি সহায়কমূল্য পাওয়া সম্ভব।”
ভবিষ্যতে যদি 'সিলসিলা ২' হয়, তবে সেটির সূর্যমুখী দৃশ্য যেন তাঁর বাগানেই শুট হয় — এটাই অনুপের একান্ত ইচ্ছে।
Recommended Post
All Rights Reserved © 2025 Siliguri Reports
Leave a Comment